মামলার বাদী বানাতে সাদা কাগজে জোর করে নেয়া হলো স্বাক্ষর, অত:পর রজু হলো অপহরণ ও ধর্ষনের মামলা! এহেন কাণ্ড ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানা পুলিশের। ওই মামলার বাদী এবং তার স্কুল পড়ুয়া মেয়ের ফোনকলের অডিও-ভিডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে গোটা উপজেলায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছড়ায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয় ওই স্কুলছাত্রীর মায়ের অডিও-ভিডিও রেকর্ডে ওই ঘটনায় মামলা না করার পক্ষে এবং পুলিশ যে জোরপূর্বক তার কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়েছেন সেটি স্পষ্ট করেই বলছেন। স্কুলছাত্রীটিও তার বক্তব্যে ‘কেউ তাকে অপহরণ করেনি’ উল্লেখ করেন। স্থানীয় এক সাংবাদিক পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় লেখালেখি করায় তার ভাইকে মামলায় ফাঁসাতেই পুলিশ তৎপর হয় বলে অভিযোগ ওঠেছে।
জানা গেছে, উপজেলার বারিখলা গ্রামের দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছাত্রী (১৬) গত ৮ জুন বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর ওই ছাত্রীকে না পেয়ে তার মা গত ১০ জুন নবীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন। দু’দিন পর পুলিশ ওই স্কুলছাত্রী এবং তার প্রেমিক একই উপজেলার রসুল্লাবাদ গ্রামের রিয়াদুল ইসলাম শান্তকে (২০) নবীনগর পৌর এলাকার নারায়ণপুরের একটি সালিশ সভা থেকে উদ্ধার করে। পরে শান্তকে একমাত্র আসামি করে একটি ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা দিয়ে নবীনগর থানা পুলিশ শনিবার দু’জনকেই কোর্টে প্রেরণ করেন।
নবীনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক পারভেজ আহমেদ জানান, ‘ছেলে এবং মেয়ের অভিভাবকদের সম্মতি এবং উপস্থিতিতে আমরা সামাজিকভাবে বিষয়টি সমাধানে বসেছিলাম। তখনই পুলিশের এস.আই নজরুল এদের দু’জনকে সালিশ সভা থেকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। শান্তর বড় ভাই স্থানীয় সাংবাদিক বর্ষণ বাবুল অভিযোগ করেন, ‘সম্প্রতি একটি গ্রামে গোলাগুলির ঘটনা নিয়ে একাধিক রিপোর্ট করায় পুলিশ আমার উপর প্রচণ্ডভাবে ক্ষিপ্ত ছিল। আর এ কারণেই আমার ভাইকে এরকম মিথ্যে মামলায় জড়ানো হয়।’ নবীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মেয়েটির মা (বাদী) স্বেচ্ছায়ই ধর্ষণ ও অপহরণের মামলা করেছেন। আমি জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়েছি, এটি একেবারেই অসত্য। ওসি স্যার সবই জানেন।’ এ বিষয়ে ওসি রণোজিত রায়ের বক্তব্য জানতে তাঁকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেন নি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মকবুল হোসেন বলেন, ‘এমন অভিযোগ সত্য নয়। তবে এরপরও বাদীর কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগটির সত্যতা পাওয়া গেলে, অবশ্যই দোষী পুলিশের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।